ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

মাতামুহুরীর (রাবার ড্যাম) ক্রসবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুতগতিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::  অকার্যকর হয়ে পড়া কক্সবাজারের চকরিয়ার রামপুর পালাকাটা পয়েন্টের রাবার ড্যাম মেরামতের জন্য মাতামুহুরী নদীতে মাটি ফেলে অস্থায়ী ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আজ বুধবারের মধ্যে ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এর পর কাজ শুরু হবে ড্যামের তিন স্প্যানের মধ্যে ফুটো (ছিদ্র) হওয়া এক স্প্যানের রাবার মেরামতের কাজ।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করতে ড্যামস্থলে যান পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড চকরিয়ার সেকশন কর্মকর্তা (এস.ও) মো. শাহ আরমান সালমান চকরিয়া নিউজকে জানান, অকার্যকর হয়ে পড়া রাবার ড্যামটির মেরামতের কাজ শুরু হবে কয়েকদিন পর। তার আগেই নদীতে মাটি ফেলে অস্থায়ী ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আগামীকালের (আজ বুধবার) মধ্যেই মাটির ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, নদীতে মাটি ফেলে অস্থায়ী ক্রসবাঁধটি নির্মাণের কাজ করছেন চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। গত ১০দিন ধরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি এই বাঁধটি নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জামাল হোসেন চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক মাটির ক্রসবাঁধ নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার পর এগিয়ে নেওয়া হয় কাজ। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে ক্রসবাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এবং কৃষকদের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখেই অকার্যকর হওয়া ড্যামটির তিন স্প্যানের মধ্যে ফুটো এক স্প্যানের রাবার রিপিয়ারিংয়ের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। তার আগে মাটি ফেলে অস্থায়ী ক্রসবাঁধ নির্মাণ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে ঠিকাদার নিয়োগ করে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন অর্থবরাদ্দ পাওয়া যায়নি।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ড্যামটির তিন নম্বর স্প্যানের রাবার দেবে গিয়ে নদীতে ধরে রাখা উজানের মিঠাপানি ভাটির দিকে নেমে যেতে থাকে। এই অবস্থায় পৌরসভা, চিরিঙ্গা, সাহারবিলসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের ৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হলে আতঙ্ক দেখা দেয় কৃষকের মাঝে।
প্রসঙ্গত দেশ স্বাধীনের পর চকরিয়াকে সবুজ বিপ্লবের আওতায় আনতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও রামপুর-পালাকাটা পয়েন্টে অস্থায়ী মাটির বাঁধ (ক্রস বাঁধ) তৈরি করে অবিভক্ত চকরিয়া উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার একর জমির চাষাবাদ নিশ্চিত করেন। যা ২০০৭ সাল পর্যন্ত মাটির বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ হয়ে আসছিল। কিন্তু প্রতিবছর প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদীর দুই পয়েন্টেই স্থায়ীভাবে রাবার ড্যাম স্থাপনের উদ্যোগ নেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। মাতামুহুরী সেচ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর আওতায় প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে ড্যাম দুটির কাজ বাস্তবায়ন করেন।
এতে এরপর থেকে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করে আসছিলেন চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার লক্ষাধিক কৃষক। তবে মাঝেমধ্যে ড্যাম দুটিতে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিলেও পরবর্তীতে রিপিয়ারিংয়ের মাধ্যমে সচল করে আসছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পাঠকের মতামত: